রম্য গল্পঃ হাসিনা-খালেদা-এরশাদের স্বর্গযাত্রা
//এক//
ধরা যাক, ইন্ডিয়ান চ্যানেলগুলোর মত বাংলাদেশেও কমেডি ট্যালেন্ট হান্ট শো চালু হয়ে গেছে। এমনই একটা শো তে বিশেষ গেস্ট হিসেবে এসেছেন চার রাজনীতিবিদ- শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, এরশাদ এবং নিজামী। তারা চারজন পাশাপাশি বসেছেন।
অনুষ্ঠান শুরু হল।
... একজন প্রতিযোগী এসে একটা জোক্স বলল। জোক্সটা এরকম.....
" পুলিশের ইমারজেন্সি বিভাগে একজন মহিলা কল করলেন। দায়িত্বরত পুলিশ ফোন রিসিভ করে সমস্যা জানতে চাইলেন-
মহিলা: আমি আমার বেডরুম থেকে বলছি। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যে কোন মুহূর্তে আমি খুন হতে পারি।
পুলিশ: কে আপনাকে খুন করবে?
মহিলা: আমার বাসার বাইরে দাড়ান লোকটি আমাকে খুন করতে পারে।
পুলিশ: এ মুহুর্তে আপনি কি বাসাই সম্পূর্ন একা ?নাকি পরিবারের অন্য কোন লোক আছে?
মহিলা: আমার রুমে আর এক জন লোক আছে।
পুলিশ: বাসার বাইরে দাড়ান এবং ভিতরে বসা লোক দুইটির পরিচয় জানতে পারি?
মহিলা: বাসার বাইরে দাড়ান লোকটি আমার স্বামী এবং ভিতরে বসা লোকটি আমার বন্ধু। "
চলুন জোক্সটি শোনার পর আমাদের প্রিয় রাজনীতিবিদদের মাঝে কেমন প্রতিক্রিয়া হল দেখে আসি...
জোক্সটি শেষ হওয়ার সাথে সাথে এরশাদ সাহেব উচ্চকন্ঠে হেসে উঠলেন। দেখেই বোঝা গেল উনি খুব মজা পেয়েছেন। আর মনে মনে বললেন," এমন অবস্থায় যে কত বার পরেছি। মজাই লেগেছে সে সময়। প্রতিবারই আমাকে ঘরে বসা লোকটির রোল প্লে করতে হয়েছে।"
শেখ হাসিনা কোন প্রতিক্রিয়া দেখালেন না। তিনি চুপচাপ বসে থাকলেন। মনে মনে ভাবতে থাকলেন এ ধরনের পরিস্থিতি স্বাধীনতা পরিপন্থী কি না।
নিজামী একটু বক্র হাসি হাসলেন। মনে মনে বললেন, " ফালতু জোক্স। এর চেয়ে ভাল জো্ক্স মুজাহিদ বলতে পারে। এই তো ঐ দিন সাংবাদিকদের সাথে রসিকতা করে বলল" দেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নাই।"
খালেদা জিয়া জোক্সটা এখনও বুঝে উঠতে পারেন নি। তাই ডানে বামে তাকালেন। সাধারন দর্শকদের হাসতে দেখে তিনিও হেসে উঠলেন। দশ মিনিট পর তিনি জোক্সটা বুঝতে পারলেন। এবার তিনি একা একা খুব জোরে আওয়াজ করে হাসলেন।
//দুই//
অনুষ্ঠান শেষ।হাসিনা, খালেদা আর নিজামী প্লেনে করে বিচার কাজ শেষ করে ফিরে যাচ্ছেন। এরশাদ চাচা ফিরে যাননি, অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকাকে পছন্দ হওয়ায় তিনি একদিন অতিরিক্ত থেকে যাচ্ছেন।
তো প্লেন উড়ছে।হঠাৎ খালেদা প্লেন থেকে একটা ১০০ টাকার নোট ফেলে দিয়ে বললেন, আমি একজন বাংলাদেশীকে খুশি করলাম।
হাসিনা আপা খেপে গেলেন। খালেদার কাছে তিনি হারবেন- এটাতো হতে পারেনা।আফটার অল তিনি জাতির বোন।সুতরাং তিনি দুইটা ৫০ টাকার নোট নিচে ফেলে দিয়ে বললেন, আমি দুইটা বাংলাদেশীকে খুশি করে দিলাম।
তাই দেখে খালেদা গাল ফুলিয়ে বসে রইলেন।দুই গাধীর রেষারেষি দেখে নিজামী মনে মনে হাসছিলেন। এবার নিজামী ১০০টা এক টাকার কয়েন নিচে ফেলে দিয়ে বললেন, আমি ১০০ পূর্ব পাকিস্তানীকে(শুয়োরের বাচ্চারাতো কখনো বাংলাদেশকে স্বীকার করে নাই
) খুশি করে দিলাম।
এতক্ষণ পাইলট বেচারা সব শুনছিল। এবার সে বিরক্ত হয়ে তিনজনকেই প্লেন থেকে ফেলে দিয়ে বলল, আমি পুরা বাংলাদেশকে খুশি করে দিলাম।
//তিন//
হাসিনার হঠাৎ জ্ঞান ফিরল। সারা শরীরে তীব্র ব্যথা নিয়ে তিনি জেগে উঠলেন।প্লেন থেকে পড়েছেন, তারতো মরে যাওয়ার কথা।সেখানে ব্যাথা নিয়ে হলেওতো তিনি বেচে আছেন। তাতেই হাসিনা মারাত্মক খুশি হলেন।
কিন্তু তার সব খুশি কর্পূরের মত উড়ে গেল যখন দেখলেন এক ব্যাটা খালেদাকে জীবন্ত দাফন করে দেয়ার চেষ্টা করছে।হাসিনা বললেন, আরে করছেন কি? উনিতো এখনো বেচে আছেন।
লোকটা বলল, চুপ। রাজনীতিবিদদের কোন বিশ্বাস আছে নাকি? তোরাতো খালি মিছা কথা কস।তোরা বাইচা নাই, মইরা গেছস। খাড়া, আগে খালেদারে দাফন কইরা লই। তারপর তোর পালা।
ইতিমধ্যেই নিজামীর জ্ঞান ফিরেছে।সব দেখে শুনে সে বুঝতে পারল লোকটা তাদের তিনজঙ্কেই জীবন্ত দাফন করবে।তাই জীবন বাচাতে সে চুপেচুপে মাঠ থেকে পাশের জঙ্গলে ঢুকে পড়ল। একটু এগুতেই দেখল একটা বিশাল কাঠাল গাছ।কাঠাল পাতা দেখতেই তার জিহ্বা দিয়ে লোল ঝরা শুরু করল।
মনের সুখে কাঁঠাল পাতা চর্বন করিতে করিতে নিজামী ভীষণ টায়ার্ড হইয়া পড়িলো। সে শুইয়া শুইয়া জাবর কাটিতে লাগিত। ইত্যবসরে নিদ্রাদেবী তাহার চক্ষে স্থায়ী হইলে সে ঘোঁত ঘোঁত করিয়া নাক ডাকিতে থাকিলো।
সেই পথ দিয়া যাইতেছিলো ধেড়ে ইঁদুর। সে নিজামীর নিদ্রাযাপনের সুযোগ লইলো। সে দ্রুত ছাগুর পাছা মারিয়া দৌড় লাগাইলো। কিন্তু নিজামীর ঘুম ভাঙ্গিয়া গেলো এবং সে ব্যাপার বুঝিতে পারিয়া ধেড়ে ইঁদুরটিকে তাড়া করিল।
তাড়া খাইয়া সে ষ্টেশনের দিকে ছুটিল এবং এবং একটা ট্রেনে উঠিয়া পড়িলো। নিজামী ছাগুও কিছুক্ষণ বাদে সে ট্রেনে আসিয়া উঠিলো। বাচাল ইদুঁরটি এরই মাঝে কিভাবে যেন শার্ট-প্যান্ট যোগাড় করিয়া পরিয়া নিলো এবং একটা পত্রিকা নিয়া মুখ ঢাকা দিলো।
নিজামী জনে জনে জিগাইতে লাগিলো, জনাব, আপনি কি একটা ধেড়ে ইঁদুরকে আসিতে দেখিয়াছেন?
একসময় সে শার্ট-প্যান্ট পরা ধেড়ে ইদুঁরকে একই প্রশ্ন করিলো। ধেড়ে পত্রিকা থেকে মুখ না তুলিয়া কহিলো, সে দুষ্ট ইদুঁরটা তো যে কিনা কিছুক্ষণ আগে আপনার পাছা মেরেছে।
নিজামী ছাগু কহিলো, কি আর বলিব দু:খের কথা। দেখুন, পাছা মেরেছে এক ঘন্টাও হয় নাই, অথচ এরই মাঝে খবরটা পত্রিকায় এসে গেছে।
//চার//
স্বর্গে নতুন আইন জারি হয়েছে,যাদের মৃত্যু খুব দুর্ভাগ্যজনক হয়েছে তারাই স্বর্গে ঢুকতে পারবে।
পরদিন সকালে স্বর্গের দ্বাররক্ষী দেখলো এক যুবক এসে হাজির যার নাম আবুল ।
রক্ষীঃ তোমার মৃত্যু কিভাবে হয়েছে?
আবুলঃ ওহ, খুব ভয়ানক।অফিস থেকে দুপুরে 25তলায় এপার্টমেন্টে ফিরি লাঞ্চ খেতে।ঢুকেই বুঝতে পারি আমার বউ ওর বয়ফ্রেন্ডের সাথে শুয়েছিল।মাথায় রক্ত চেপে যায়।ব্যাটারে খুঁজতে থাকি।না পেয়ে বারান্দায় যাই।দেখি ব্যাটা কার্নিস ধরে ঝুলে আছে।ওর হাতের মধ্যে তখন জুতোর গোড়ালি দিয়ে মারতে থাকি।তাতে ২৫ তলা থেকে নীচের গাছের উপর পড়ে ও।তখনো ব্যাটা বেঁচে আছে।রাগে অন্ধহয়ে ঘরের ফ্রীজটা ঠেলে বারান্দায় এনে নীচে ওর শরীর তাক করে ফেলে দেই।আর তাতে আমি এতই উত্তেজিত হই যে তখনই হার্টএটাক করে মারা যাই।সবশুনে রক্ষী তাকে স্বর্গে ঢুকতে বলে।
এর কয়েক সেকেন্ডের মাথায় হাবুল নামের যুবক এসে হাজির।
রক্ষীঃ তা তোমার মৃত্যু কিভাবে হয়েছে?
হাবুলঃ ওহ ভয়ংকর।আমার ২৬ তলার এপার্টমেন্টের বারান্দায় ব্যায়াম করছিলাম আমি।খুব ক্লান্তহয়ে রেলিংয়ে বসি রিলাক্স করতে।হঠাত্ মাথাঘুরে নীচে পড়েযাই।সৌভাগ্যক্রমে ২৫তলার বারান্দার রেলিংটা ধরতে পেরে ঝুলে বাঁচার চেস্টা করি।হঠাত্ এক হারামজাদা কিজানি কেন, অযথা এসে আমার রেলিং ধরা হাতের উপর জুতারবারি মারতে থাকে।তাতে হাত ফসকে বহুনীচের এক গাছের উপর পড়ে ওখান থেকে মাটিতে পড়ি।তখনও বাঁচার আশা ছিল আমার।কিন্তু ঐ হারামজাদা আমার ঐ অবস্থায় ওর ফ্রিজটা ঠেলে আমার উপর ফ্যালায়।তখনই মৃত্যুহয় আমায়।
রক্ষীঃ হু, খুবই দুঃখজনক।ওকে তুমি যাও ভেতরে যাও।
হাবুল ভেতরে ঢোকার দুই মিনিট পর এরশাদ চাচা এসে হাজির!
রক্ষীঃ ওহ্ নো! তুমি আবার কেমনে মরলা?
এরশাদঃ আর কইয়েননারে ভাই।এতদিন পর যে এমনে ধরা খামু তা কি জানতাম? খুবই সুন্দরি, এক গার্লফ্রেন্ডের বেডরুমে ছিলাম কাম করা অবস্থায়। আগের মত জোরতো আর নাই এইবয়সে। তাই কাম শ্যাস হইতে একটু দেরি হইতাছিল।হঠাত্ ওর জামাই আইসা দরজায় নক করে। কামের মাঝখানে একি কান্ড। জীবনে এই পেরথম। জলদি লুকাইয়া পড়নের জায়গা খুঁজি। আরকিছু না পাইয়া, ফ্রীজের ভিতরে গা ঢাকা দেই। কিন্তু ভাইগ্য আমার।হালারপুতে এতকিছু থাকতে আস্ত ফ্রিজটা ধইরা নীচে ফালাইয়া দিল!
তারপরেই নিজেরে এইখানে আবিষ্কার করলাম !!!
হাসিনা-খালেদা-এরশাদ-নিজামী চারটাই খতম। আমাদের শান্তি।
আমার যত কৌতুকঃ
কোপাকুপি একখান জুক্স
এবং কিছু কমন কৌতুক
একজন মানুষের জীবনে যত টেনশন
কিছু কমন কৌতুক
আরও কিছু কমন কৌতুক
এবং কিছু কমন কৌতুক
মাঝরাত্তিরে কমন কৌতুক
আবার কিছু কমন কৌতুক
চরম একখান কৌতুক
ছাগু আর রাজাকারগো লাইগা কৌতুক
আরেকখান চরম কৌতুক
আবার কিছু চরম কৌতুক
সেইরকম একটা কৌতুক
মদনকাণ্ড ও শৌচকর্ম
আমার যত রম্য গল্পঃ
তথ্যমন্ত্রির ঘড়ি
টিভি অথবা একজন নোয়াখাইল্যার গল্প
==================================================
একটি আমি তুমি আমরা প্রোডাশন। কপি পেস্ট মারলে কিন্তু খবর করে দিব।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন